কনক আমিরুল ইসলাম ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের চলনবিল অধ্যুষিত নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানার অন্তর্গত শ্রীপুর গ্রামের এক সাধারণ কৃষক পরিবারে জন্ম। পিতা প্রয়াত আমজাদ হোসেন এবং মাতা হাসিনা বেগম। নিরক্ষর মাতা-পিতার ছয় সন্তানের মধ্যে পঞ্চম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেণিসহ এম এ এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লোকসঙ্গীত মাদার গান: সংশ্লিষ্ট লোকজীবন ও লোকদর্শন শীর্ষক অভিসন্দর্ভ রচনা করে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন। বেসরকারি সংস্থায় উন্নয়ন কর্মকর্তার কাজ দিয়ে কর্মজীবনের শুরু, এরপর... Read more »
মা তুই কেমন মেয়ে বলতো দেখি কৈশোরে তোর বাপের ভয়ে উপরদিকে চাসনি পুতুল খেলার দিনগুলি তোর তখনও শেষ হয়নি বাপ মানুষটার ঘরে এলি কথায় কথায় চমকে উঠলি দল বেঁধে সব আমরা এলাম তবুও তোর ভয়না গেলো এখনও তুই লজ্জা পাস বাপের সামনে কথা না কস ঘরকাটালি এতদিন মা হৃদয় কি তোর এতই হীন ? ০৬.১২.২০০০ Read more »
সাইবেরিয়া শীতল কারাগারে চেলাকাঠে ভরে রাখি হৃদয়ের একটি কোণ ফায়ার প্লেস উত্তর হিমালয় থেকে যে পাখিটি উড়ে আসে সে আমার পত্ররেখা খুলে দেই বুকের কপাট নিশ্বাসে খেলে যায় বিদ্যুচ্চমক হৃদয়ে পায়চারী করে হেঁটে হেঁটে গানগায় উড়ে বেড়ায় জ্বলে ওঠে দপ করে তুমি পাখা ঝাঁপটালেআমি দ্বিগুণ হই উত্তপ্ত শিরায় হারপুণে গাঁথা তিমির গর্জনে লাফিয়ে ওঠে আমার হৃৎপিণ্ড পাখিটি ফিরে আসে বুকের এককোণে রেখে দেই অঙ্গণা করে তার সুগন্ধি পাখায় ঝল¬সিত পালকে... Read more »
চ্যান্সেলরের রঙিন পোশাকে কনভোকেশনের আনন্দ তখন তুঙ্গে তুমি আর আমি পাশাপাশি ডায়াসে অবিরত বক্তৃতা মাইকের গর্জনে সাপেদের ফোঁস ফোঁস সার্টিফিকেটে সয়লাব সবদিক আমাদের পোশাকে প্রজাপতি খেলা সামরিক প্রহরায় থমথমে চারিদিক পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে বোরকা উঁচিয়ে চুম্বন উৎসব সিনেটপ্রান্তরে তৃপ্ত পাখির মতো ধ্যানমগ্ন চোখে পার্সটা খুঁজে ফেরা ঘুমের অঘোরে ঠোঁটের ক্ষতে জিহ্বার স্পর্শ যেমন আমিও তেমনি তোমার চোখের পাতায় ফিরে আসি ঘুম হয়ে। ২২.০৯.২০০০ Read more »
গতকাল তাকে দেখেছি একটা কালো ঘোড়া দু’ চোখে সমুদ্র মেখে সিনেপ্লেক্স পার হয়ে যেতে মুক্তাখচিত হাসিতে বিলবোর্ড কাঁপিয়ে ঢাকার বিজ্ঞাপণ বাজারে হেঁটে যেতে। তার আঙুলের ছোঁয়ায় জেগে ওঠে নগরীর শপিংমলগুলো পত্রিকাওয়ালারা রাতভোর আহাজারি করে ক্যাপশনে ক্যাপশনে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের নির্ঘুম রাত জাগা ছোপ ছোপ রঙে আঁকা বিমূর্ত সকালে পত্রিকার পাতা জুঁড়ে সে থাকে আর সে ক্যাটওয়াক বালিকা উড়ে যায় নক্ষত্রের মাঝে যখন সে পথ হাঁটে পলায়নপর বিদ্যুৎ রেখা হঠাৎ দেখা দেয়... Read more »
তাঁর অন্তর জুঁড়ে আমার বসবাস দাবি দাওয়াহীন এক উম্মাতাল আলিঙ্গন খাখা মাঠের ভেতর দুর্বাঘাসে ঢাকা হঠাৎ কার্পেট যেন সুকোমল চাঁদনী রাতের ঘুম আনন্দপুর পাহাড়শ্রেণির অনুচ্চ গিরিপথে ঝিরিঝিরি সবুজ রাজাপুর ষ্টেশন থেকে বাঁশির শব্দ অনতিদুরে কাঁটাতারে ঘেরা টোপ ওপারে ধানক্ষেত হঠাৎ ছুটে আসা বি এস এফ পাতাকুড়ানিদের শব্দহীন চলাফেরা রিজার্ভ ফরেস্ট সতর্ক চাহনি সীমান্ত রেখায় অভিযোগহীন চাওয়া পাওয়া একটি ঘর আর মোটাচাল মোটা কাপর আর তারা ভরা একটি আকাশ আমাদের ছোট্ট... Read more »
অঘোরে ঘুমাও তুমি সারারাত আমি জানি সেলফোনে মেয়েটির সাথে কথার ধস্তাধস্তি করে এক অমিমাংসিত সমাপ্তি তোমাকে পৌঁছেদিল ঘুমের প্রান্ত সীমায় অনিঃশ্বেষ ডিসকোর্স তোমার চোখের প্রান্তর জুঁড়ে দৃশ্যমান লাইটপোস্টের রেখা এক বিস্তীর্ণ সমুদ্রসীমা যেন ঘুমেও মুক্তি নেই তোমার যুবক আছড়ে পড়বে লোডশেডিং ক্লান্তি তোমার লাগাম টেনে ধরবে বখতিয়ারের ঘোড়ার মতোন অথবা ঈশাখার তলোয়ার দেখার মতোন খচখচ করে উঠবে তোমার চোখ পুনরায় তুমি ছুটে যাবে মেয়েটির কাছে নির্ঘুম রাতটি কাঁটিয়ে তোমাকে যেতেই... Read more »
আমি ছড়িয়ে দিলাম কবিতার ঘাসফুল ঢাকার আকাশে যতখুশি বিষ ছড়াকনা মৃত্যুর হাতছানি রমনার প্রান্তর জুঁড়ে অশত্থের ছায়াঘেরা এক আকাশ দেবো তোমাকে শামসুর রাহমানের মতোন শুভ্র কররেখায় আঁকা কবিকেশর অথবা সেলিম আল্ দীন এর স্বদেশ ও সমগ্র জুঁড়ে থাকা বুঁনো পাংশুল বালিকাদের মতোন চাঁপা নিশ্বাসের ঘণ ঘণ ওঠানামা থেকে চির কালের মতো তোমাকে মুক্তি দিলাম বালিকা সিংহকেশর সাদা বক টুপ করে খসে যাওয়া কান্তজীর মন্দির থেকে ছিটকেপড়া চ্যাপ্টা ইটের রামায়ন কথামালা... Read more »
ঊষাকালের আকাশের দিকে তাকালেই তার কথা মনে পড়ে খুব তার নিশ্বাসের ওঠানামা আমার কাছে শিশির ভেজা দুর্বাঘাসের ঢেউ খেলানো খরগোশ নরম ছোঁয়ার মতোন অন্ধকারে চেয়ে থাকা বিড়ালের তীব্র আকাক্সক্ষা তার ঘামের গন্ধ হঠাৎ কাঁচাডাবের সুগন্ধ ফ্লেভার মেখে দেয় আমাকে অথবা টান টান শিরাগুলোকে স্নায়বিক উত্তাল স্রোতে ভাসিয়ে দেয় তাড়ি খাওয়ার হালকা নেশায় কামাতুর কড়াইতে বাষ্প ওঠা কুমারী গুড়ের মতোন তার উত্তাপের গন্ধ আমার শরীরে মাখি যখন সাত মহাদেশের মতো প্রকম্পিত... Read more »
শেষ রাতের ভাঙাপুরাণ ─ কনক ইসলাম ১. আমাদের যাযাবর দিনগুলি ব্যাবিলনের ঝুলন্ত উদ্যানের মতো ফিরে আসুক, অথবা হায়ারো গ্লিফিক আঁকি তোর মুখে বুকের মেসোপটেমিয়ায় গড়ে তুলি সুমেরীয় সভ্যতা হাম্মুরাবি এশিরীয় বালিকা নিপ্পুর রাজপ্রাসাদ, বাগদাদের পথে পথে স্তনশোভা বিস্ফোরণ সিরিজ বোমার আঘাতে বড্ড ক্লান্ত আমার ক্যাল্ডীয় দুহাত আয় সখী সাঁতার কাঁটি মহেঞ্জোদারোতে তোর পায়ের পাতায় রঙিন হোক রানাগার হেঁটে চলি লংমার্চ করে, আফ্রিকা গ্রীস হয়ে এশিয়া মাইনরে ফিনীশীয় বর্ণমালায় লেখা হোক... Read more »